বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: এবার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনার দাবি জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আইনত স্বাধীন, কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দি। তাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য কার্যকর কমিশন করতে চাইলে সংস্কার আনতে হবে।
বুধবার সকাল ১০টায় ইটিআই ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনের তিন বছর অতিবাহিত হতে যাচ্ছে। বাকি দুবছর সময়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচন নিয়ে রাজধানীবাসীর আগ্রহ ও উদ্বেগ অন্তহীন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও জাতীয় নির্বাচনের মতোই এতে সমগ্র দেশবাসীর দৃষ্টি নিবন্ধ থাকে।
গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সুখকর নয় উল্লেখ করে এই কমিশনার বলেন, অতীতে যেসব সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে, তাতে প্রথম দুটি নির্বাচন কুমিল্লা ও রংপুর সিটি কর্পেঅরেশন নির্বাচনে আমাদের সফলতা ছিল। কিন্তু বেশি দিন আপনার রূপে আপনি বিভোর থাকা হলো না। পরবর্তী পাঁচটি সিটি কর্পেঅরেশন নির্বাচনের তিনটির বিষয়ে আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমি এককভাবে দায়িত্ব পালন করি এবং গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে আমি প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে এই তিনটি নির্বাচনের স্বরূপ সন্ধান করি। কিন্তু এই তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমার কাছে মোটেও সুখকর নয়।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিগত ওই তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। কেন নির্বাচন নিরপেক্ষ, শুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হয় না? এ প্রশ্নের উত্তর আত্মজিজ্ঞাসার কারণেই আমাকে খুঁজতে হয়েছে।
নিজের নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা বর্ণনায় এ কমিশনার বলেন, আমার নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে– নির্বাচন কমিশন আইনত স্বাধীন, কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে সেই স্বাধীনতা নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাছে বন্দি। এ জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রয়োজন। নির্বাচন যদি গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত হয়, তা হলে গণতন্ত্রের পদযাত্রা অবারিত করতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হতে হবে। অবৈধভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জনগণের প্রতি বা গণতন্ত্রের প্রতি কোনো কমিটমেন্ট থাকে না।
নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হুশিয়ারি দিয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে আপনারা নিশ্চয়ই জিরো টলারেন্স নীতি দেখাবেন। এ ক্ষেত্রে আপনাদের শিথিলতাও সহ্য করা হবে না এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন কমিশন দ্বিধাদ্বন্দ্বে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ঢাকার উভয় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবারই সার্বিকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। ইভিএম নিয়ে অনেকের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের জন্য এটি একটি অগ্নিপরীক্ষা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা যদি সফলকাম হতে পারি, তা হলে পরে সর্বক্ষেত্রে ইভিএম ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এর আগেও নানা সংস্কারের কথা বলেছিলেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করে এর আগে একাধিকবার নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন।
Leave a Reply